বাংলাদেশে সমবায় ব্যবসায়ের সমস্যা ও সম্ভাবনা

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৫) - ব্যবসায় উদ্যোগ - মালিকানার ভিত্তিতে ব্যবসায় | | NCTB BOOK
21
21

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করলে দেখা যায়, এখনও এ দেশের শতকরা আশি ভাগ মানুষ কৃষি ও গ্রামভিত্তিক বিভিন্ন পেশায় যেমন- কৃষক, শ্রমিক, তাঁতি, মৎস চাষি, কামার, কুমার, জেলে ও বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প যেমন- বাঁশ ও বেত শিল্প, মৃৎশিল্প, ঝিঁনুক শিল্প, হস্ত শিল্প এবং বিভিন্ন ধরনের একমালিকানা ব্যবসায় যেমন- মুদি দোকান, দরজি দোকান, ঔষধ বিক্রির দোকান, সবজি বিক্রির দোকান, সেলুন, চা বিক্রির দোকান ইত্যাদির উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছে। অথচ তাদের বেশির ভাগই স্বল্প ও নিম্ন আয়ের। ফলে তারা বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুযোগ-সুবিধা যেমন- শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদি থেকে বঞ্চিত। কিন্তু তাদের একার পক্ষে নিজেদের উন্নতি করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে প্রাচীন চাষাবাদ পদ্ধতি, মূলধনের স্বল্পতা, উন্নত সার, বীজ ও কীটনাশকের অভাব, খণ্ড খণ্ড কৃষি জমি ইত্যাদি কারণে এ দেশের অর্থনীতির প্রাণ কৃষক ও কৃষি তাদের যথাযথ অবদান রাখতে পারছে না। আবার নিজেদের মধ্যে একতা, সহযোগিতা ও আস্থা না থাকার কারণে বিভিন্ন দালাল শ্রেণির লোকদের দ্বারা নানা ধরনের বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। এ সকল স্বল্প ও নিম্নবিত্তের কৃষিজীবী, শ্রমজীবী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ক্ষেত্র হচ্ছে সমবায় সংগঠন। সমমনা ও সমশ্রেণির ঐ সকল গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে সমবায় সমিতি গঠন করে নিজেদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সাথে সাথে দেশের উন্নয়নেও অবদান রাখতে পারে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশে অনেক সমবায় সংগঠন প্রতিষ্ঠা হয়েছে যারা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নেও অবদান রাখছে। কিন্তু দেশের এবং সমাজের তুলনায় তা যথেষ্ট নয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা ইত্যাদির মাধ্যমে সকলকে বিশেষ করে যুবসমাজকে সমবায়ের দিকে উৎসাহিত করতে হবে।

Content added By
Promotion